প্রকল্প সমূহ

ফ্যাব-মাস্টার
তৈরি পোশাক কারখানায় প্র্রাথমিক খরচের ৬০-৭০ শতাংশই যায় কাপড়ের পেছনে। কিন্তু সনাতন ব্যবস্থায় কারখানায় বিপুল পরিমাণ কাপড়ের অপচয় হচ্ছে। সেই অপচয়রোধে একটা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি গ্রহণের জন্য এই প্রকল্প। এতে একটি ইন্টার্যারক্টিভ অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার তৈরি করা হবে, যা কাপড়ের সর্বোচ্চ ব্যবহারের পাশাপাশি সর্বনিম্ন অপচয় নিশ্চিত করবে। এই সফটওয়্যারের গাণিতিক পদ্ধতিতে বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয় ঘটানো হবে, যাতে যৌক্তিক দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি গাণিতিক দৃষ্টিভঙ্গিও থাকবে। এ ব্যবস্থায় কমপক্ষে ২ শতাংশ কাপড় অপচয় কমানো সম্ভব।
পেটেন্ট টিউব
পেটেন্ট নিবন্ধনের কোন অনলাইন প্লাটফর্ম না থাকায় বাংলাদেশে তা নিবন্ধনে অনেক সময় ব্যয় হয়। প্যাটেন্ট টিউব (PatentTube) নামে একটি অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করা হবে এ প্রকল্পে। প্ল্যাটফর্মে পেটেন্ট নিয়ে থাকা অনেক কন্টেন্ট খুব সহজে ব্যবহারযোগ্য হবে। পেটেন্ট নিবন্ধনের আবেদন প্রক্রিয়া ছবি, ভিডিও এবং অডিও কন্টেন্ট-এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। ঘরে বসে পেটেন্ট নিবন্ধনের আবেদন করা যাবে এবং সকল ফি অনলাইনে প্রদান করা যাবে। পেটেন্ট নিবন্ধনের আবেদন, মূল্যায়ন ও গ্র্যান্টেড প্রক্রিয়া হবে স্বয়ংক্রিয়।
অসহায়দেরকে সহায়তা প্রদানের নিরঙ্কুশ পন্থা
মধ্যম আয়ের বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষই নিজেদের চিকিৎসার খরচ নিজেরা জোগাতে অক্ষম। অতঃপর তারা সামাজিক সাহায্যের আবেদন করেন। আর এই কাজে সহায়তা করে থাকে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরা। এই সাহার্যপ্রার্থীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইদানিংক কিছু মিথ্যে ঘটনাও সামনে আনা হচ্ছে। অসহায়ত্বের মিথ্যা ঘটনা বর্ণনা করে সাহায্য নেয়া মানুষের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই কাজটি ফেসবুক অথবা টুইটারের মাধ্যমে ঘটানো হয়। এ ধরনের প্রতারণা বন্ধ করতে একটি অনলাইন 'নির্বিঘ্ন চ্যারিটেবল এইড সার্ভিস (UCAS)’ তৈরি করছে অলিভিন লিমিটেড। যেটা সাহার্যপ্রার্থীর সঠিক তথ্য নিয়ে অনুদান যথাযথ প্রাপকের কাছে যাওয়া নিশ্চিত করবে এবং দাতাদের জানাবে যে তাদের টাকা নষ্ট হয় নাই।
ডিজিটাল ট্রান্সফরমার পর্যবেক্ষণ এবং কন্ট্রোল সিস্টেম
জ্বালানী মন্ত্রণালয়ের অন্তর্গত পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, ডিপিডিসি এবং ডেসকো’র আনুমানিক ৮ লক্ষ ট্রান্সফরমার রয়েছে। ওভারলোডিং, চুরি, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রতি মাসে কম-বেশী ২,০০০-২,৫০০ ট্রান্সফরমার পরিবর্তন করতে হয়। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে প্রতিস্থাপন পর্যন্ত ব্যাপক সময় লাগার ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। আবার লোকবলের অভাবে সেটা প্রতিস্থাপনে ৪৮ ঘন্টা থেকে এক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এ অবস্থার পরিবর্তনে ‘ডিজিটাল ট্রান্সফরমার পর্যবেক্ষণ এবং কন্ট্রোল সিস্টেম’ গড়ে তোলা হবে এই প্রকল্পে। যাতে সরকারি ব্যয় কমার সঙ্গে সঙ্গে রাজস্ব বৃদ্ধি এবং জনগণের সমস্যার দ্রুত প্রতিকার হবে।
ফুড এট হোম
স্বাস্থ্যকর খাবার পাওয়া বর্তমানে সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। অধিকাংশ সময় আমরা ঘরে বানানো খাবারকে অগ্রাধিকার দিলেও সেটা পাওয়া দুরূহ হয়ে যায়। কারণ জানা থাকে না এই খাবার কার কাছ থেকে কিংবা কোন মাধ্যমে পাওয়া যাবে। এ কারণে একটি নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা জরুরি, যেখান থেকে সহজে বাড়িতে তৈরি খাবারের তথ্য জেনে ও খাবার অর্ডার করে সেটা ঘরে বসে পাওয়া যাবে। এই প্রকল্পে সেরকম একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
ইউডিসি উদ্যোক্তাদের জন্য সহজ পেমেন্ট সিস্টেম
ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনলাইন সেবা কার্যক্রমও বিস্তৃত হচ্ছে। অধিকাংশ ব্যাংকই অনলাইন সেবার আওতায় এনেছে গ্রাহকদের। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে বর্তমানে দেশের ৪৫৪৭ টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার-ইউডিসির মাধ্যমে ১০২ টির অধিক সেবা দিচ্ছে সরকার ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। এই সেবা প্রদানের কাজে ৪-৬টি ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করতে হয় ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তাদের। এই অবস্থা থেকে মুক্তি দিয়ে একীভূত ব্যবস্থা নিয়ে আসা হবে এই প্রকল্পে।
কচুরিপনা থেকে সবুজ সার
ফসল লাগানোর মৌসুমে কৃষি জমিতে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা ও আবর্জনা জমা হয়। যাহা পরিষ্কার করে জমি ফসল উৎপাদন উপযোগী করতে হয়। কিন্তু কচুরিপনা ও আবর্জনাকে সবুজ সার বা জৈব সারে রূপান্তর করলে পরিষ্কারের শ্রম ও খরচ থেকে রক্ষা পাবেন কৃষক। নির্ভরতা কমবে রাসায়নিক সারের উপর। কচুরিপনা ও আবর্জনা থেকে জৈব সার প্রস্তুতকরণে স্বল্প মূল্যের জ্বালানী সাশ্রয়ী দেশীয় প্রযুক্তির মেশিন তৈরি করা হবে এই প্রকল্পে।
ফরমালিন প্রতিরোধে কাইটোসানের প্রিজারভেটিভ
মাছ, ফল এবং অন্যান্য খাবারে ফরমালিনের ব্যাপক ব্যবহার জনগণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। সাধারাণত যে কেমিক্যাল মৃতদেহ পচনরোধে ব্যবহার হতো, এখন তা খাদ্য তাজা, আকর্ষণীয় ও সংরক্ষণে ব্যবহার হচ্ছে। চিংড়ি মাছের খোসা থেকে কাইটোসান নামক একটি উপাদান আহরণ করা হচ্ছে, যেটা দিয়ে খাদ্য সংরক্ষণে প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভ বানানো সম্ভব। সেটা বিষাক্ত ফরমালিনের পরিবর্তে খাদ্য সংরক্ষণের নিরাপদ ব্যবস্থায় পরিণত হবে।
দৈনন্দিন মৌলিক চিকিৎসার অটোমেটেড স্মার্ট সহকারী
আমাদের প্রস্তাবিত সমাধানটি একটি স্বয়ংক্রিয় রোবট, হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স এবং কর্মচারীদের সাহায্যকারী হিসাবে ব্যবহৃত হবে। একটি রুগিদেরকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম (ওষধ, তোয়ালে, বেডশিট,খাবার) সরবারহ করবে। এর মাধ্যমে মেডিকেল রিপোর্ট রুগীদের কাছে এবং এক হাসপাতাল ভিতর বিভিন্ন স্থানে পৌঁছানো সম্ভব। এছাড়াও এটি হাসপাতাল আগত বিভিন্ন রুগীদের ডাক্তারদের শিডিউল সম্পর্কিত নিশ্চিত করবে এবং হাসপাতালের বিভিন্ন তথ্য প্রদান করবে। এটি দিনে ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে সক্ষম।
আবহাওয়া বর্তমান অবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রচারের সিস্টেম
বাংলাদেশ দুর্যোগ প্রবণ দেশ। আবার জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিন্তু বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরে ঘূর্ণিঝড় সতকর্তা কেন্দ্রের সব কার্যক্রম সনাতন পদ্ধতিতে চলে। যাতে আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ, স্থানান্তর, সন্নিবেশ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পূর্বাভাস প্রস্তুত ও সতর্কবার্তা দেওয়ার কাজ সম্পন্ন হয়। এটা সময়সাপেক্ষ ও অসুবিধাজনক। আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ, স্থানান্তর, সন্নিবেশ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পূর্বাভাস প্রস্তুত ও সতর্কবার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সব কাজ স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনায় নানা হবে এই প্রকল্পে। যাতে খুব সহজে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, জনগণ ও গণমাধ্যমকে আবহাওয়ার তথ্য জানানো সম্ভব হবে।
মোবাইলে পাবলিক টয়লেটের দিকনির্দেশ
ঢাকায় ২ কোটির বেশি লোকের বসবাস। যে সব মানুষ কাজের জন্য বের হয় তার মধ্যে প্রায় মানুষকেই প্রতিদিন পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করতে হয়৷ আর ৯৯ শতাংশ পাবলিক টয়লেট অস্বাস্থ্যকর ও অপরিষ্কার; এবং বলতে গেলে মেয়েদের জন্য পাবলিক টয়লেটের কোন ব্যবস্থাই নাই । এ প্রকল্পে সমাধান হিসাবে ম্যাপ সম্পর্কিত মোবাইল এবং ওয়েব অ্যাপ তৈরী করা হবে। যাতে স্মার্টফোন দিয়ে পাবলিক টয়লেট বা মসজিদ টয়লেটের লোকেশন খুঁজে পাওয়া যাবে। স্মার্ট ফোন না থাকলে SMS-এর মধ্যমে নিকটস্থ লোকেশন পয়েন্ট জানা যাবে।
রাঙ্গামাটির জন্য বিদেশি নাগরিকদের অনলাইন অনুমতি সিস্টেম
ভ্রমণ বা অন্যান্য কাজে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় ভ্রমণেচ্ছুক বিদেশি নাগরিকদের সরকারি অনুমতি নিতে হয়। যেটার ব্যবস্থাপনায় জেলা প্রশাসন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থাকে। এক্ষেত্রে প্রচলিত প্রক্রিয়ায় কোনো অনলাইন ব্যবস্থাপনা না থাকায় তাদের অনেক সময় ব্যয় হয়। সে কারণে তাদের ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়। এই প্রকল্পে একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। যাতে তারা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এবং সার্বক্ষণিক আবেদনের আপডেট জানতে পারবেন অনলাইনে কিংবা মোবাইল এসএমএস-এর মাধ্যমে।